ভূমিদস্যু রানার উত্থান
গডফাদার শামীম ওসমানের শ্যালকের ছত্রছায়ায় অপরাধ সাম্রাজ্য

ষ্টাফ রিপোর্টার
প্রকাশ: ২০ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০৪:৪৬ পিএম

গডফাদার শামীম ওসমানের শ্যালকের ছত্রছায়ায় অপরাধ সাম্রাজ্য
নারায়ণগঞ্জে একসময়ের সাধারণ শ্রমিক থেকে কুখ্যাত ভূমিদস্যুতে পরিণত হওয়া এস এম রানার বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু করেছে পিবিআই। গত ১৯ ফেব্রুয়ারি, বিদেশে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করার সময় ঢাকা হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরে জিজ্ঞাসাবাদের পর রাতেই নারায়ণগঞ্জ পিবিআইয়ের কাছে তাকে হস্তান্তর করা হয়।
তদন্ত সূত্রে জানা গেছে, এস এম রানা, যিনি এক সময় স্কিন প্রিন্ট কারখানার শ্রমিক ছিলেন, শামীম ওসমানের শ্যালক তানভীর রহমান টিটুর ছত্রছায়ায় বেড়ে ওঠেন এবং ভয়ংকর সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে জড়িয়ে পড়েন। জমি দখল, চাঁদাবাজি, লুটতরাজ, এমনকি গুমসহ নানা অপরাধে সক্রিয়ভাবে যুক্ত ছিলেন তিনি।
বিশেষত, গত বছরের ১৯ জুলাই বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় নারায়ণগঞ্জে শামীম ওসমান ও তার শ্যালকের নির্দেশে অস্ত্রধারী সন্ত্রাসীরা হামলা চালায়, যেখানে নিরীহ মানুষের ওপর গুলি ছোঁড়া হয়। এস এম রানার গুলিবর্ষণের ভিডিও ফুটেজ সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়ে, যা আজও চাঞ্চল্যের সৃষ্টি করছে।
স্থানীয় সূত্র জানায়, এস এম রানার উত্থানের পেছনে শামীম ওসমান ও টিটুর প্রত্যক্ষ মদত ছিল। মাত্র এক যুগের মধ্যে তিনি কয়েক হাজার কোটি টাকার মালিক হয়ে ওঠেন, যা সাধারণ মানুষের কাছে রহস্যজনক। একসময় তার পরিবার অভাবের তাড়নায় দিন কাটাত, কিন্তু অপরাধের ছায়ায় তিনি অঢেল সম্পদের মালিক বনে যান।
এলাকাবাসীর অভিযোগ, শামীম ওসমানের শ্যালক টিটুর ব্যবসায়িক সহযোগী হিসেবে এস এম রানা জমি দখল থেকে সরকারি প্রকল্পের টাকা লুটপাট পর্যন্ত নানা দুর্নীতিতে জড়িয়ে পড়েন। বিশেষ করে, পঞ্চবটি থেকে মুন্সিগঞ্জের মোক্তারপুর পর্যন্ত সড়ক সম্প্রসারণ প্রকল্পে অনিয়মের মাধ্যমে শত শত কোটি টাকা আত্মসাৎ করেছেন বলে অভিযোগ রয়েছে।
এছাড়া, বিসিবির বর্তমান সভাপতি ফারুক আহমেদের সাথে এস এম রানার ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক ছিল, যা তাকে ধরাছোঁয়ার বাইরে রাখত। গুলশানে তাদের নিয়মিত বৈঠকের খবরও প্রকাশ্যে এসেছে। টিটু দেশ ছাড়ার পর, ফারুকই রানার দেখভালের দায়িত্ব নেন বলে স্থানীয়দের দাবি।
জনমনে প্রশ্ন উঠেছে—এই অপরাধ সাম্রাজ্যের নেপথ্যে আর কারা জড়িত? এলাকাবাসী নতুন করে তদন্তের দাবি জানিয়েছে, যাতে এস এম রানার অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডের প্রকৃত তথ্য সামনে আসে এবং ন্যায়বিচার নিশ্চিত হয়।