বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্ররাজনীতি পুরোপুরি বন্ধে টাস্কফোর্সের সুপারিশ

নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০১:১৪ পিএম

ছবি : সংগৃহীত
দেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে ছাত্ররাজনীতি রাখা হবে কি না, তা নিয়ে দীর্ঘদিন ধরেই বিতর্ক চলছে। সংঘর্ষ, প্রাণহানি এবং শিক্ষার পরিবেশ বিঘ্নিত হওয়ায় এ বিষয়ে নতুন করে আলোচনা শুরু হয়েছে। সম্প্রতি ‘অর্থনৈতিক সংস্কারবিষয়ক টাস্কফোর্স’ সরাসরি ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধের সুপারিশ করেছে।
গত ৩০ জানুয়ারি প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস ও শিক্ষা ও পরিকল্পনা উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদের কাছে এক প্রতিবেদনে এ সুপারিশ তুলে ধরা হয়।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বিশ্ববিদ্যালয়ে স্থিতিশীল শিক্ষার পরিবেশ নিশ্চিত করতে সব সরকারি ও বেসরকারি ক্যাম্পাসে ছাত্ররাজনীতি সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ করা উচিত। শিক্ষার মানোন্নয়নে একক ভর্তি পরীক্ষা চালু করা প্রয়োজন, যা আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত এসএটি ও জিআরইর ভিত্তিতে প্রণয়ন করতে হবে। প্রাথমিক, মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা ব্যবস্থার সমন্বিত সংস্কার অপরিহার্য, যেখানে সরকার, বেসরকারি খাত ও এনজিওগুলোর যৌথ প্রচেষ্টা দরকার।
শিক্ষাক্ষেত্রে সংস্কারের আরও সুপারিশ
টাস্কফোর্স শিক্ষাখাতের টেকসই উন্নয়নে বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ প্রস্তাব দিয়েছে—
শিক্ষাদান ও মূল্যায়ন পদ্ধতি আধুনিকায়ন করা হবে। গ্রন্থাগার, ডিজিটাল শ্রেণিকক্ষ, খেলার মাঠ ও স্বাস্থ্যকর টয়লেট সুবিধা উন্নত করতে হবে।
তথ্যপ্রযুক্তি সম্প্রসারণের জন্য অতিরিক্ত বাজেট বরাদ্দ এবং স্কুল পর্যায়ে নিরাপদ খাদ্য সরবরাহ কর্মসূচি বাস্তবায়ন করা দরকার।
আন্তর্জাতিক র্যাংকিংয়ে উন্নতির লক্ষ্যে কিছু পাবলিক ও প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয় একীভূত করার সুপারিশ করা হয়েছে।
বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে ইংরেজি পাঠ্যপুস্তক ও ইংরেজি মাধ্যমে শিক্ষা দেওয়ার বিষয়ে উৎসাহিত করতে হবে, যাতে বিদেশি শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের আকৃষ্ট করা যায়।
অটোপাস বাতিল এবং প্রশ্নপত্র ফাঁসের সঙ্গে জড়িতদের ৩-১০ বছরের কারাদণ্ড নিশ্চিত করতে হবে।
সরকারি ও বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের শুধুমাত্র যোগ্যতার ভিত্তিতে নিয়োগ নিশ্চিত করতে হবে এবং তাদের কর্মক্ষমতা মূল্যায়নের ব্যবস্থা চালু করতে হবে।
এই সুপারিশগুলো বাস্তবায়িত হলে বাংলাদেশের উচ্চশিক্ষা ব্যবস্থা আরও মানসম্পন্ন ও আন্তর্জাতিকভাবে প্রতিযোগিতামূলক হবে বলে আশা করা হচ্ছে।