মোবাইল ফোন সেবায় শুল্ক বাড়ানোর প্রস্তাব, খরচ বাড়বে গ্রাহকদের

নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৮ জানুয়ারি ২০২৫, ০২:০৩ পিএম

ছবি : সংগৃহীত
মোবাইল ফোন সেবায় খরচ বাড়ানোর পরিকল্পনা নিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার। বর্তমানে মোবাইল ফোন সেবায় ২০ শতাংশ সম্পূরক শুল্ক রয়েছে, যা ২৩ শতাংশে উন্নীত করা হতে পারে শিগগিরই।
জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) সূত্রে জানা গেছে, উচ্চপর্যায়ের সরকারের অনুমোদনসহ দুটি মন্ত্রণালয়ের সম্মতি পেয়েছে এবং প্রজ্ঞাপন জারি হওয়ার পর এটি কার্যকর হবে।
বর্তমানে মোবাইল ফোনে ১০০ টাকার রিচার্জে গ্রাহকদের ২৮.১ টাকা সম্পূরক শুল্ক, ভ্যাট ও সারচার্জ হিসেবে কেটে নেয়া হয়, যা পরবর্তীতে ৫৪.৬ টাকা হয়ে দাঁড়ায়। সম্পূরক শুল্ক আরও ৩ শতাংশ বাড়ানোর প্রস্তাবে, ১০০ টাকার রিচার্জে সম্পূরক শুল্ক, ভ্যাট ও সারচার্জ বাবদ কাটা পড়বে ২৯.৮ টাকা, ফলে গ্রাহককে ৫৬.৩ টাকা কর দিতে হবে এবং অবশিষ্ট ৪৩.৭০ টাকা ব্যবহারের জন্য পাবেন।
মোবাইল ও ইন্টারনেট সেবার ওপর চাপ
অন্তর্বর্তী সরকারের শুল্ক বাড়ানোর পরিকল্পনা নিয়ে অসন্তোষ দেখা দিয়েছে সাধারণ জনগণের মধ্যে। অনেক গ্রাহক জানান, মোবাইল ফোনে কথা বলা ও ইন্টারনেট ব্যবহারের খরচ বৃদ্ধি পাচ্ছে, যার ফলে তারা ডাটা ব্যবহারে কাটছাঁট করছেন বা মোবাইল কল ব্যবহার কমিয়ে দিয়েছে। বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনের (বিটিআরসি) সর্বশেষ তথ্যানুযায়ী, গত নভেম্বর মাসে মোবাইল গ্রাহকের সংখ্যা ১৮ কোটি ৮৭ লাখে নেমে এসেছে, যা জুনের চেয়ে ৭৩ লাখ কম।
এ ব্যাপারে বিভিন্ন মোবাইল গ্রাহক সামাজিক মাধ্যমে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। এক গ্রাহক বলেছেন, "সরকার মোবাইল ফোন সেবার ইন্ডাস্ট্রি থেকে বড় আকারে রাজস্ব তুলতে চায়, অথচ এটি এখন মৌলিক অধিকার হয়ে দাঁড়িয়েছে।"
অন্য একজন গ্রাহক জানিয়েছেন, "মোবাইল কল ব্যবহারে কাটছাঁট করছি, মেসেঞ্জার বা হোয়াটসঅ্যাপ বেশি ব্যবহার করি।"
ইন্টারনেট সেবা নিয়ে উদ্বেগ
বাংলাদেশ মুঠোফোন গ্রাহক অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মো. মহিউদ্দিন আহমেদ বলেন, "ইন্টারনেট সেবায় বিশ্বের অন্যান্য দেশের তুলনায় আমরা তলানিতে আছি। কিন্তু ভ্যাটের ক্ষেত্রে বিশ্বের সর্বোচ্চ স্থানে। দেশের ৪৮ শতাংশ মানুষ এখনও ইন্টারনেট সেবার বাইরে, আর এই নতুন শুল্ক চাপ আরও বৈষম্য সৃষ্টি করবে।"
এই পরিস্থিতিতে সরকারি কর্মকর্তারা বিষয়টি নিয়ে এখনো মুখ খোলেননি এবং প্রজ্ঞাপন জারির পর তা নিয়ে কথা বলার আশ্বাস দিয়েছেন।