পাঠ্যপুস্তকে ‘আদিবাসী’ গ্রাফিতি নিয়ে এনসিটিবির সামনে দুই সংগঠনের সংঘর্ষ

নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১৫ জানুয়ারি ২০২৫, ০৮:৪৩ পিএম

ছবি : সংগৃহীত
২০২৫ সালের নবম-দশম শ্রেণির বাংলা দ্বিতীয়পত্র বইয়ের প্রচ্ছদে 'আদিবাসী' শব্দটি রাখা বা বাদ দেওয়াকে কেন্দ্র করে রাজধানীর মতিঝিলে জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড (এনসিটিবি) কার্যালয়ের সামনে দু’পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এতে বেশ কয়েকজন আহত হয়েছেন।
গত ১২ জানুয়ারি ‘স্টুডেন্ট ফর সভরেন্টি’ নামের একটি সংগঠন এনসিটিবির সামনে বিক্ষোভ করলে গ্রাফিতিটি সরিয়ে ফেলা হয়। এর প্রতিবাদে পাঠ্যবইয়ে গ্রাফিতিটি পুনর্বহালের দাবিতে বুধবার (১৫ জানুয়ারি) ‘সংক্ষুব্ধ আদিবাসী ছাত্র-জনতা’ ব্যানারে একটি দল এনসিটিবির সামনে বিক্ষোভ করতে যায়। অপরদিকে, জুলাই গণ-অভ্যুত্থানবিরোধী অখণ্ড ভারতের কল্পিত গ্রাফিতি সংযোজনের সঙ্গে জড়িতদের শাস্তির দাবিসহ পাঁচ দফা দাবি নিয়ে এনসিটিবি ভবন ঘেরাও কর্মসূচি পালন করতে যায় ‘স্টুডেন্ট ফর সভরেন্টি’।
প্রত্যক্ষদর্শীদের মতে, উভয় গ্রুপ এনসিটিবি কার্যালয়ের সামনে পৃথকভাবে বিক্ষোভ শুরু করে। তবে দুপুর ১টার দিকে পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। একপর্যায়ে কথাকাটাকাটির পর হাতাহাতি এবং সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে দুই দল।
এ ঘটনায় উভয় পক্ষই একে অপরের বিরুদ্ধে হামলার অভিযোগ করেছে। পাহাড়ি আন্দোলনকারীদের প্রতিনিধি অলিক মৃ বলেন, ‘স্টুডেন্ট ফর সভরেন্টি’ আমাদের ১১ সদস্যকে আহত করেছে। তার দাবি, এনসিটিবি পাঠ্যবইয়ে এবার ‘আদিবাসী’ লেখা গ্রাফিতি যুক্ত করেছিল, কিন্তু তার বিরুদ্ধে ‘মব’ তৈরি করা হয়। পরে গ্রাফিতিটি বাদ দেওয়া হয়। এই গ্রাফিতি পুনর্বহাল করতে হবে।
‘স্টুডেন্ট ফর সভরেন্টি’র আহ্বায়ক জিয়াউল ইসলাম বলেন, আদিবাসী শব্দটি কোনো জাতিগত পরিচয় নয়। তাই আদিবাসী শব্দের বিরোধিতা করলে রেসিজম (বর্ণবাদ) হয় না। তার অভিযোগ, আমরা তাদের ওপর হামলা চালাইনি; বরং তারাই আমাদের ওপর হামলা চালিয়ে ১৪ জনকে আহত করেছে। আহতদের মধ্যে ৯ জনকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
আহতরা হলেন- রুপাইয়া শ্রেষ্ঠা তঞ্চঙ্গ্যা (২৫), ইসাবা শুহরাত (৩২), রেংইয়ং ম্র (২৭), ফুটন্ত চাকমা (২২), ধনজেত্রা (২৮), অন্তত ধামাই (৩৫), ডিবিসি টিভির সাংবাদিক জুয়েল মারাক (৩৫), শৈলী (২৭) ও ডোনায়ই ম্রো (২৫)।
এ বিষয়ে মতিঝিল থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মোহিমেনুল ইসলাম জানান, ‘স্টুডেন্ট ফর সভরেন্টি’র সদস্যরা ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর বিক্ষোভকারীদের ধাওয়া দিলে তারা ছত্রভঙ্গ হয়ে যায়। তবে পরিস্থিতি এখন নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।