দৈনিক যুগান্তরের সম্পাদক হিসেবে যোগ দিয়েছেন কবি আবদুল হাই শিকদার

যুগেরচিন্তা২৪ ডেস্ক
প্রকাশ: ১৫ জানুয়ারি ২০২৫, ১১:৫৯ পিএম

ছবি : সংগৃহীত
দৈনিক যুগান্তরের সম্পাদক হিসেবে কবি, সাহিত্যিক ও সাংবাদিক আবদুল হাই শিকদার দায়িত্ব গ্রহণ করেছেন। বুধবার (১৫ জানুয়ারি) দুপুরে যুগান্তর কার্যালয়ে এক আনুষ্ঠানিক অনুষ্ঠানে তিনি দায়িত্বভার নেন। এ সময় যমুনা গ্রুপের চেয়ারম্যান ও যুগান্তরের প্রকাশক অ্যাডভোকেট সালমা ইসলাম, যমুনা গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক শামীম ইসলাম, গ্রুপ পরিচালক মনিকা নাজনীন ইসলাম, সুমাইয়া রোজালিন ইসলাম ও এস এম আবদুল ওয়াদুদ তাকে স্বাগত জানান।
যমুনা টেলিভিশনের সিইও ফাহিম আহমেদ, দৈনিক যুগান্তরের উপসম্পাদক আহমেদ দীপু, এহসানুল হক বাবু, বিএম জাহাঙ্গীর ও আসিফ রশীদ, প্রধান বার্তা-সম্পাদক আবদুর রহমান, নগর সম্পাদক মিজান মালিক, প্রধান প্রতিবেদক মাসুদ করিমসহ যুগান্তরের সব বিভাগীয় প্রধান ও সিনিয়র সাংবাদিকরা এ সময় উপস্থিত ছিলেন।
এর আগে সকালে আবদুল হাই শিকদার বনানী কবরস্থানে যমুনা গ্রুপের প্রয়াত চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা নুরুল ইসলামের কবরে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান এবং মোনাজাতের মাধ্যমে মরহুমের আত্মার মাগফিরাত কামনা করেন। তিনি সদ্য বিদায়ী সম্পাদক সাইফুল আলমের স্থলাভিষিক্ত হলেন।
কবি আবদুল হাই শিকদার বাংলাদেশের একজন বিশিষ্ট সাংবাদিক ও সংগঠক হিসেবে পরিচিত। তিনি জাতীয় প্রেস ক্লাবের ব্যবস্থাপনা কমিটির অন্যতম সদস্য এবং ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের (ডিইউজে) নির্বাচিত দু'বারের সভাপতি। ৪৪ বছরের সাংবাদিকতা জীবনে তিনি স্বাধীনতার পর বাংলাদেশের প্রথম নিয়মিত সাহিত্য মাসিক ‘এখন’-এর প্রতিষ্ঠাতা ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক, আমার দেশ পত্রিকার সিনিয়র সহকারী সম্পাদক, সরকারি বার্তা সংস্থা বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থার (বাসস) ফিচার বিভাগ প্রধান, দৈনিক ইনকিলাবের ফিচার সম্পাদক ও সহকারী সম্পাদক, টাইমস বাংলা ট্রাস্টের ম্যাগাজিন ‘বিচিত্রা’র সিনিয়র সহকারী সম্পাদক, দৈনিক মিল্লাত পত্রিকার সহকারী সম্পাদক ও সাহিত্য সম্পাদক, সাপ্তাহিক সচিত্র স্বদেশের সহকারী সম্পাদক, সিনিয়র সহ-সম্পাদক এবং প্রতিবেদক হিসেবে কর্মরত ছিলেন। এছাড়াও তিনি একজন প্রথিতযশা কলামিস্ট হিসেবেও পরিচিত।
ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ সরকারের রোষানলে পড়ে তিনি বিগত ১৫ বছর সাংবাদিকতার বাইরে থাকতে বাধ্য হন। সাংবাদিকতার পাশাপাশি আবদুল হাই শিকদার দেশে-বিদেশে কবি, সাহিত্যিক ও নজরুল গবেষক হিসেবে পরিচিত। তিনি নজরুল ইনস্টিটিউটের নির্বাহী পরিচালক ছিলেন। টিভি উপস্থাপক ও দেশের সমসাময়িক অনুষ্ঠানের জনপ্রিয় আলোচক হিসেবেও পরিচিত। এছাড়াও তিনি অধ্যাপক, শিশু-সাহিত্যিক, সাংস্কৃতিক সংগঠক ও গল্পকার হিসেবে পরিচিত। তার কবিতা, গবেষণা, শিশু-সাহিত্য, গল্প, রাজনীতি, সংস্কৃতি, চলচ্চিত্র ও ভ্রমণ ইত্যাদি বিষয়ে প্রকাশিত গ্রন্থের সংখ্যা দেড় শতাধিক।
জুলাই গণঅভ্যুত্থানে ফ্যাসিস্ট সরকারের বিরুদ্ধে সোচ্চার ভূমিকায় ছিলেন আবদুল হাই শিকদার। স্বৈরশাসন ও ফ্যাসিবাদবিরোধী সংগ্রামে সাংবাদিক নেতা হিসেবে গত ১৫ বছর ধরে রাজপথে প্রতিবাদ করে আসছেন। ফেসবুক, ইউটিউবসহ বিভিন্ন সামাজিক মাধ্যম তার সেই সংগ্রামের সাক্ষী। অনিয়ম, দুর্নীতি, গুম ও খুনের বিরুদ্ধে রাজপথে সংগ্রাম চালিয়ে যাওয়ায় তাকে ও তার পরিবারকে নির্যাতনের শিকার হতে হয়েছে।
কবি আবদুল হাই শিকদার সাংবাদিকতা ও সাহিত্যে পঞ্চাশের বেশি সম্মাননা পেয়েছেন। গ্লাসগো বেঙ্গলি পারফরমিং আর্টস সম্মাননা, বাংলা একাডেমি পুরস্কার, সেন্টার ফর ন্যাশনাল কালচার (সিএনসি) সম্মাননা, জাতীয় প্রেস ক্লাব ও ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়ন (ডিইউজে) সম্মাননা, হিউম্যান রাইটস অ্যাওয়ার্ড, চুরুলিয়া নজরুল একাডেমী পুরস্কার (ভারত), জিরো পয়েন্ট সম্মাননা (ভারত), নতুন গতি সাহিত্য পুরস্কার (ভারত), শহীদ জিয়া স্মৃতি পুরস্কার, নজরুল সম্মাননা, নাঙ্গলকোট, কিশোরকণ্ঠ সাহিত্য পুরস্কার, জাতীয় কবি নজরুল ইসলাম জন্মশত বার্ষিকী সংবর্ধনা পদক, ভাসানী সনদ, রংপুর নাগরিক সংবর্ধনা পদক এবং বাংলাদেশ ইয়ুথ ফোরাম সম্মাননা উল্লেখযোগ্য।
কবি আবদুল হাই শিকদারের জন্ম ১৯৫৭ সালের ১ জানুয়ারি। কুড়িগ্রাম জেলার ভূরুঙ্গামারী উপজেলার দক্ষিণ ছাট গোপালপুর গ্রামে এক সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে তিনি জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতা কৃষিবিদ ওয়াজেদ আলী ও মাতা হালিমা খাতুন। তার সহধর্মিণীর নাম আবিদা শিকদার। পারিবারিক জীবনে আবদুল হাই শিকদার দুই সন্তানের জনক। পুত্র পরম ওয়াজেদ ও কন্যা প্রকৃতি ওয়াজেদ শিকদার।
যোগদানের পর আবদুল হাই শিকদার বলেন, বাংলাদেশের অন্যতম জনপ্রিয় পত্রিকা যুগান্তর। সত্যের সন্ধানে নির্ভীক একটি জাতীয় দৈনিক। আমি এই পত্রিকার দায়িত্ব পেয়ে খুব ভালো লাগছে... সুন্দর কর্ম পরিবেশ।