বাংলাদেশে এইচএমপিভি আক্রান্ত প্রথম রোগীর মৃত্যু

নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১৬ জানুয়ারি ২০২৫, ০৮:১৯ পিএম

ছবি : সংগৃহীত
প্রথম এইচএমপিভি আক্রান্ত নারী ৩০ বছর বয়সী সানজিদা আক্তার। গত ১২ জানুয়ারি তার এই ভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার খবর আসে। মহাখালী সংক্রামক হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ১৫ জানুয়ারি সন্ধ্যা ৭টায় তার মৃত্যু হয়। দেশে এইচএমপিভি শনাক্ত হওয়া কোনো ব্যক্তির মৃত্যুর প্রথম ঘটনা এটি।
ডেথ রিভিউ করবেন কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, স্বজনরা ইতোমধ্যে লাশ নিয়ে গেছেন। তারপরও এটি নিয়ে অধিদপ্তর বা মন্ত্রণালয় ব্রিফ করবে। সেই আলোকে আমরা পরবর্তী পরিকল্পনা করব। জানা যায়, ওই নারীর বিদেশ সফরের কোনো ইতিহাস ছিল না। তার গ্রামের বাড়ি কিশোরগঞ্জের ভৈরব এলাকায়।
১২ জানুয়ারি রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের এক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, ওই নারী এইচএমপিভি আক্রান্ত হওয়ার পাশাপাশি ক্লেবসিয়েলা নিউমোনিয়ায়ও আক্রান্ত ছিলেন।
আইইডিসিআরের পরিচালক অধ্যাপক তাহমিনা শিরীন জানিয়েছিলেন, এইচএমপিভি ভাইরাসে প্রতিবছরই দু-চারজন রোগী আক্রান্ত হন দেশে। এটি শুধুমাত্র চীনেই নয়, বিশ্বের বিভিন্ন দেশেই পাওয়া যাচ্ছে। বাংলাদেশেও এই ভাইরাসের উপস্থিতি আগেই শনাক্ত হয়েছে।
বর্তমানে এইচএমপিভির চিকিৎসার জন্য কোনো নির্দিষ্ট অ্যান্টিভাইরাল থেরাপি নেই এবং এইচএমপিভি প্রতিরোধের জন্য কোনো ভ্যাকসিন নেই। তাই রোগের উপসর্গ অনুযায়ী চিকিৎসা করা হয়।
১২ জানুয়ারি স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের রোগ নিয়ন্ত্রণ শাখার একটি সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, চীনসহ উপমহাদেশের বিভিন্ন দেশে এইচএমপিভি ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব ও তীব্রতা বেড়েছে। বিশেষ করে ১৪ বছরের কম বয়সী শিশু এবং ৬৫ বছর বা তার বেশি বয়সী ব্যক্তিদের মধ্যে এই রোগের সংক্রমণ বেশি দেখা যায়। সেই সঙ্গে দীর্ঘমেয়াদি স্বাস্থ্য সমস্যা যেমন হাঁপানি বা ক্রনিক অবস্ট্রাকটিভ পালমোনারি ডিজিজ, গর্ভবতী নারী এবং দুর্বল রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা সম্পন্ন ব্যক্তিদের জন্য উচ্চ ঝুঁকি সৃষ্টি হতে পারে।
সম্প্রতি চীন ও অন্যান্য দেশে এর প্রাদুর্ভাব দেখা দেওয়ায় বাংলাদেশে এর সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে রাখা প্রয়োজন। চলতি বছরের জানুয়ারির শুরুতে পূর্ব এশিয়ার দেশ চীনে প্রথম এর সংক্রমণ ধরা পড়ে। এরপর জাপানে ভাইরাসটি শনাক্ত হয়। এখন এইচএমপিভির প্রাদুর্ভাব মালয়েশিয়া ও ভারতেও ছড়িয়ে পড়েছে।
ভাইরাসটির সংক্রমণ থেকে বাঁচতে নিয়মিত হাত ধোয়া, স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা এবং আক্রান্ত ব্যক্তিদের যথাসম্ভব ঘরে থাকার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। যদি কারও শরীরে তিন দিনের জ্বর থাকে, তাকে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।