ইতালিতে ৬০ হাজার বাংলাদেশির পাসপোর্ট আটকা

যুগেরচিন্তা২৪ প্রতিবেদক
প্রকাশ: ৩০ জানুয়ারি ২০২৫, ১২:১৭ এএম

ছবি : সংগৃহীত
পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন বলেছেন, পূর্ববর্তী ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ সরকারের সময় উচ্চ পর্যায়ের নেতৃত্বের উৎসাহে ব্যাংক থেকে অর্থ চুরি করা হয়েছিল। এটি কোনো দুর্ঘটনা ছিল না, বরং সর্বোচ্চ পর্যায়ের কর্তৃপক্ষের সহায়তায় সম্ভব হয়েছে।
বুধবার (২৯ জানুয়ারি) পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে ইন্টিগ্রেটেড অনলাইন অথেনটিকেশন ম্যানেজমেন্ট (অ্যাপোস্টিল কনভেনশন ১৯৬১) বাস্তবায়নের প্রথম পর্যায়ের উদ্বোধনকালে তিনি এসব কথা বলেন।
কিছু ব্যাংককে ইচ্ছাকৃতভাবে দুর্বল করার বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, ভালো ব্যাংকগুলোকে ইচ্ছাকৃতভাবে খারাপ ঋণের বোঝা চাপিয়ে দেওয়া হয়েছিল। উচ্চ পর্যায়ের কর্তৃপক্ষের সমর্থন ছাড়া এই ধরনের পদক্ষেপ সম্ভব হত না।
নতুন চালু হওয়া অথেনটিকেশন ব্যবস্থাসহ বিভিন্ন প্রক্রিয়ায় দুর্নীতি প্রতিরোধের প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দেন তৌহিদ হোসেন। তিনি বলেন, এটি একটি ছোট পদক্ষেপ, কিন্তু এই ধরনের পদক্ষেপ আমাদের অনেক দূর এগিয়ে নিয়ে যেতে পারে। যেখানে দুর্নীতির সুযোগ আছে, সেখানে তা সম্পূর্ণরূপে নির্মূল করা কঠিন। তাই দুর্নীতি দমনের জন্য আমাদের অবশ্যই এই সুযোগগুলো সরিয়ে ফেলতে হবে।
ইতালিতে ৬০,০০০ বাংলাদেশির পাসপোর্ট আটকে থাকার বিষয়টি উল্লেখ করে ডকুমেন্টের বিশ্বাসযোগ্যতার সমস্যাকে এর কারণ বলে দায়ী করেন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা। তৌহিদ হোসেন বলেন, বাংলাদেশের একজন দালাল ইতালির একটি সংস্থার কাছ থেকে অনুমোদন পেয়েছিল, কিন্তু প্রক্রিয়াটি সঠিকভাবে পরিচালনা করার সক্ষমতা সংস্থার নেই।
বিদেশে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি প্রসঙ্গে বাংলাদেশি আইন প্রণেতাদের গ্রেপ্তারের উদাহরণ তুলে ধরেন তিনি। তৌহিদ হোসেন বলেন, একটি দেশের ভাবমূর্তি একদিনে তৈরি হয় না, রাতারাতি ভেঙে পড়ে না। ভূমধ্যসাগর পাড়ি দেওয়ার সময় যখন সবচেয়ে বেশিসংখ্যক বাংলাদেশি মারা যায়, তখন কেবল ইতিবাচক বিবৃতি আমাদের ভাবমূর্তি রক্ষা করতে পারে না।
তিনি উল্লেখ করেন, ইতিবাচক পদক্ষেপগুলো ধারণা উন্নত করতে সাহায্য করে। যখন একজন বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত ট্যাক্সি ড্রাইভার বিদেশে হারানো অর্থ ফেরত দেন, তখন আমাদের ভাবমূর্তি উন্নত হয়। বিপরীতে, যখন একজন সংসদ সদস্য দুর্নীতির জন্য অন্য দেশে জেলে যান, তখন আমাদের সুনাম বজায় রাখা চ্যালেঞ্জিং হয়ে ওঠে।
বাংলাদেশের বিদেশি মিশনগুলোতে জনবল সংকটের কথাও তুলে ধরেন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা। কাতারের উদাহরণ দিয়ে তিনি বলেন, কাতারে যদি একটি মিশনকে প্রতিদিন ৩০০টি পাসপোর্ট বিতরণ করতে হয়, তাহলে তারা কীভাবে অন্য কোনো পরিষেবা প্রদান করবে?
তৌহিদ হোসেন বলেন, মিশনগুলোতে জনবল বৃদ্ধি এবং পরিষেবাগুলোকে ডিজিটালাইজ করার জন্য পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে। আমাদের সিস্টেমকে আধুনিকীকরণ করতে হবে, যাতে পাসপোর্ট আবেদনকারীদের আর মিশনে যেতে না হয়। পরিবর্তে পাসপোর্ট পরিষেবাগুলো তাদের কাছে যথাযথ নথিপত্রসহ পৌঁছাতে হবে।