আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীগুলোকে যুদ্ধ-পরিস্থিতির মতো সতর্ক থাকতে বলেছেন প্রধান উপদেষ্টা

অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশ: ০৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ১১:২০ পিএম

ছবি : সংগৃহীত
এ বছর বাংলাদেশের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ উল্লেখ করে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীকে যুদ্ধ-পরিস্থিতির মতো সতর্ক থাকার নির্দেশ দিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। তিনি বলেছেন, কাউকে বিশৃঙ্খলা ও অরাজকতা সৃষ্টির সুযোগ দেওয়া যাবে না।
সোমবার (৩ ফেব্রুয়ারি) রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় নিরাপত্তা বাহিনীর শীর্ষ কর্মকর্তাদের সঙ্গে উচ্চ পর্যায়ের বৈঠকে তিনি এ নির্দেশনা দেন। সভায় স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী, প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মো. খোদা বখস চৌধুরী, স্বরাষ্ট্র সচিব নাসিমুল গনি এবং পুলিশ, বিজিবি, র্যাব, ডিএমপি, কোস্ট গার্ড ও বিশেষ শাখার প্রধানরা উপস্থিত ছিলেন।
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, নিরাপত্তা বাহিনীগুলোকে আধুনিক যোগাযোগ প্রযুক্তির সর্বোচ্চ ব্যবহার নিশ্চিত করতে হবে, যাতে দ্রুত পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব হয়। তিনি দ্রুত একটি কমান্ড সেন্টার গঠনের ওপর জোর দেন, যা আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীগুলোর মধ্যে সমন্বয় সাধন করবে।
তিনি আরও বলেন, নতুন কমান্ড কাঠামো দক্ষতা ও নিবিড় পর্যবেক্ষণের মাধ্যমে দেশের বিভিন্ন বাহিনী ও আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী সংস্থাগুলোর কার্যক্রমকে একীভূত করবে। একইসঙ্গে, দেশের স্থিতিশীলতা রক্ষায় যেকোনো বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির চেষ্টার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দেন।
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ক্ষমতাচ্যুত স্বৈরশাসক শেখ হাসিনার ঘনিষ্ঠরা বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির জন্য বিশাল অঙ্কের অর্থ ব্যয় করছে এবং মিথ্যা তথ্য ছড়াচ্ছে। তিনি দেশবাসীকে এ ধরনের অপপ্রচারের বিরুদ্ধে সতর্ক থাকার আহ্বান জানান এবং জনগণকে এক হয়ে এর বিরুদ্ধে লড়াই করার আহ্বান জানান।
প্রধান উপদেষ্টা নিরাপত্তা বাহিনীকে ধর্মীয় ও জাতিগত সংখ্যালঘুদের সুরক্ষার বিষয়ে বিশেষ ব্যবস্থা নিতে বলেন। তিনি সতর্ক করে বলেন, সংখ্যালঘুদের পর্যাপ্ত নিরাপত্তা দিতে না পারলে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে দেশের ভাবমূর্তি ক্ষতিগ্রস্ত হবে। এ বিষয়ে সম্পূর্ণ স্বচ্ছ থাকার ওপর জোর দেন তিনি।
প্রধান উপদেষ্টা পুলিশকে চাঁদাবাজদের বিরুদ্ধে কঠোর অভিযান চালানোর নির্দেশ দেন, যাতে পবিত্র রমজান মাসে খাদ্য ও নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম স্থিতিশীল থাকে।
পুলিশ প্রধান বাহারুল আলম জানান, শেখ হাসিনার নিরাপত্তা বাহিনী কর্তৃক সংঘটিত হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় দায়ের হওয়া মামলাগুলো পর্যবেক্ষণের জন্য ১০টি বিশেষ টিম গঠন করা হয়েছে। এ বিষয়ে প্রধান উপদেষ্টা দ্রুত বিচারের নির্দেশ দেন এবং নিরপরাধ কেউ যাতে হয়রানির শিকার না হয়, তা নিশ্চিত করতে বলেন।
পুলিশ মহাপরিদর্শক আরও জানান, বাংলাদেশ ইতোমধ্যে ইন্টারপোলের কাছে শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে রেড নোটিশ জারির অনুরোধ পাঠিয়েছে। তিনি আশা প্রকাশ করেন, শিগগিরই এ বিষয়ে সাড়া পাওয়া যাবে।
ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের কমিশনার শেখ মো. সাজ্জাত আলী জানান, রাজধানীতে পুলিশের কঠোর নজরদারির ফলে ছিনতাই ও ডাকাতির ঘটনা কমেছে। তিনি জানান, এ নিরাপত্তা ব্যবস্থা আরও জোরদার করা হবে।
প্রধান উপদেষ্টার কড়া নির্দেশনার পর নিরাপত্তা বাহিনী সর্বোচ্চ সতর্ক অবস্থায় রয়েছে এবং দেশের সার্বিক আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে নানা পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে।