Logo
Logo
×

জাতীয়

নতুন রাজনৈতিক বন্দোবস্তের অর্থনৈতিক কর্মসূচি শীর্ষক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত

Icon

অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশ: ০৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ১১:১৩ পিএম

নতুন রাজনৈতিক বন্দোবস্তের অর্থনৈতিক কর্মসূচি শীর্ষক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত

ছবি : সংগৃহীত

জাতীয় নাগরিক কমিটির উদ্যোগে আজ ৫ ফেব্রুয়ারি, বুধবার বাংলামোটর কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে রাজনৈতিক বক্তৃতামালা সিরিজের ৪র্থ বক্তৃতা ‘‘নতুন রাজনৈতিক বন্দোবস্তের অর্থনৈতিক কর্মসূচি’’ অনুষ্ঠিত হয়। উক্ত অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন ইউনিভার্সিটি অব লন্ডনের সোয়াসের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক ড. মোশতাক হোসাইন খান। 

তিনি তাঁর বক্তব্যে এই অঞ্চলে বন্দোবস্তের ইতিহাস দিয়ে আলোচনা শুরু করেন। তিনি দাবি করেন, "চিরস্থায়ী বন্দোবস্তের ধারণাটাও কিন্তু খারাপ ছিল না কিন্তু ক্ষমতার ভারসাম্য ও আইনী কাঠামোর মধ্যে পার্থক্যের কারণে এই বন্দোবস্ত তখন পুঁজিবাদী উত্থানের কাজে লাগানো যায়নি। কারণ, যাদের বন্দোবস্ত করে জমিদারি দেওয়া হয়েছিল তাদের কোন ক্ষমতা ছিল না। অন্যদিকে ক্ষমতাবান ছিল স্থানীয় মুসলিম কৃষক ও জোতদার। পরবর্তীতে আমরা দেখি জোতদাররা রাজনৈতিকভাবে ক্ষমতাবান হয় প্রথম কৃষক প্রজা পার্টি ও মুসলিম লীগ গঠনের মাধ্যমে। এ অঞ্চলে জমিদারি প্রথার উচ্ছেদ ছিল প্রথম বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন। কিন্তু এখানে প্রতিটি বন্দোবস্তেই আইনের বিন্যাসের সাথে ক্ষমতা কাঠামো মানানসই ছিল না তাই এখানে কোন বন্দোবস্তই টেকসই হয়নি। স্বাধীনতার পর প্রথম নতুন বন্দোবস্ত নিয়ে এসেছিলেন প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান। তিনি বহুদলীয় গণতন্ত্রের মাধ্যমে রাজনৈতিক বন্দোবস্ত ও শিল্পখাতে উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে সাংগঠনিক দক্ষতা বৃদ্ধির মাধ্যমে অর্থনৈতিক বন্দোবস্ত প্রতিষ্ঠা করেন। এই বন্দোবস্তের ফলেই মূলত বাংলাদেশের তৈরি পোশাক শিল্পের বিকাশ সাধন হয়। কিন্তু সময়ের সাথে সাথে সে বন্দোবস্ত আরেকটি পৃষ্ঠপোষকতার সাথে দলীয় শাসনের সম্পর্কে পরিণত যার পরিণতি হয় ১/১১ তে এবং সর্বশেষ ২৪ এর গণ-অভ্যুত্থানে। বর্তমানে বাংলাদেশের রাজনীতি ও অর্থনীতি একটি সরলরেখায় এসে মিলিয়ে দিয়েছে যেখানে কয়েকটি অলিগার্কের কাছে জিম্মি গোটা দেশের অর্থনীতি। নতুন অর্থনৈতিক বন্দোবস্ত মানে হলো এই অলিগার্ক থেকে অর্থনীতিকে মুক্ত করা যাতে রাজনীতি কিছু ব্যবসায়ীর হাতে জিম্মি হয়ে না পড়ে। আগামীর রাজনীতিতে যদি অলিগার্কের প্রভাব না ভাংগা যায় তাহলে নিম্নমধ্যবিত্ত শ্রেণী থেকে উদ্যোক্তা তৈরি করা সম্ভব নয়। আর নতুন বন্দোবস্তের পাটাতন নির্মাণের এখনই শ্রেষ্ঠ সময়। তাই পুরনো বন্দোবস্ত টিকিয়ে রেখে কোনভাবেই নির্বাচন হতে দেওয়া উচিত হবে না।"

অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন জাতীয় নাগরিক কমিটির আহ্বায়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী ও যুগ্ম আহবায়ক সারোয়ার তুষার। 

সারোয়ার তুষার বলেন, "আজকের দিনটি ঐতিহাসিক। আজ নতুন রাজনৈতিক দল গঠনের আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দিয়েছেন ছাত্র নেতারা। মাত্র দুই ঘন্টায় ৭০,০০০ মানুষ অনলাইন ফর্ম পূরণ করেছে৷ এতে করে বোঝা যায় মানুষ ছাত্র-তরুণদের এই দলের জন্য মুখিয়ে আছে। এত বিপুল জনভিত্তিসম্পন্ন দলকে কিংস পার্টি বলা হাস্যকর। ৩ আগস্ট নাহিদ ইসলাম ঘোষণা করেছিলেন বাংলাদেশের ইতিহাসের অভিনব এক দফা। ফ্যাসিবাদের পতন ঘটেছে ঠিকই, একদফার বাকি অংশ ফ্যাসিবাদী ব্যবস্থা এখনো অটুট রয়েছে। নতুন রাজনৈতিক বন্দোবস্ত কায়েমের কার্যক্রম চলমান। আমরা যে গণতান্ত্রিক নিয়ম প্রতিষ্ঠা করতে চাই, তার রক্ষকও আমাদেরকেই হতে হবে। আগামীতে গণপরিষদ নির্বাচনের মাধ্যমে একটি গণতান্ত্রিক সংবিধান ও রাষ্ট্র আমরা দেশবাসীর হাতে তুলে দিতে চাই।"

উপস্থিত ছিলেন সোয়াসের অধ্যাপক পল্লবী রায়, নাগরিক কমিটির ডা. তাজনূভা জাবীন, ফয়সাল মাহমুদ শান্ত, ইফতেখারুল ইসলাম, সাদিয়া ফারজানা, আলাউদ্দীন মোহাম্মদ প্রমুখ। 

অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন জাতীয় নাগরিক কমিটির সদস্য টীনা নন্দী।

Swapno

Abu Al Moursalin Babla

Editor & Publisher
Email: [email protected]

অনুসরণ করুন