ডিবেট ফর ডেমোক্রেসির ছায়া সংসদ
শেখ হাসিনা দেশকে একব্যক্তির তালুকে পরিণত করেছিল: অধ্যাপক ড. মাহবুব উল্লাহ

অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশ: ০৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০৪:৪৬ পিএম

ছবি : সংগৃহীত
গত সাড়ে ১৫ বছরে দেশে একটি চোরাচালানের অর্থনীতি গড়ে তোলা হয়েছে। শেখ হাসিনা সমস্ত রাষ্ট্রকে এককভাবে নিয়ন্ত্রণ করেছেন। আর্থিক খাত থেকে বিচারালয় পর্যন্ত সবকিছু নিয়ন্ত্রণে নিয়ে রাষ্ট্রকে ব্যক্তিগত সম্পত্তিতে পরিণত করেছিলেন। তিনি বিশ্বাস করতেন "আমিই রাষ্ট্র"। এই "রাষ্ট্রের ব্যক্তিগতকরণ" ধারণা বাস্তবায়নের মাধ্যমে প্রচুর অর্থ বিদেশে পাচার করা হয়েছে। যুবলীগ ও ছাত্রলীগকে বিচারক নিয়োগ দিয়ে পুরো বিচার ব্যবস্থাকে দলীয়করণ করা হয়েছিল। রাজনৈতিকভাবে নিয়োগপ্রাপ্ত বিচারপতি এনায়েতুর রহিম এস আলম গ্রুপের অর্থ পাচারকে অবৈধভাবে সুরক্ষা দিয়েছিলেন।
শেখ রেহানার মেয়ে বৃটিশ সাবেক মন্ত্রী টিউলিপ সিদ্দিকের বিরুদ্ধে দুর্নীতির মাধ্যমে অর্থ পাচারের অভিযোগ এসেছে, যা বাংলাদেশ ও বৃটিশ সরকারকে গুরুত্বসহকারে তদন্ত করতে হবে। আজ ঢাকার এফডিসিতে আয়োজিত একটি ছায়া সংসদে প্রধান অতিথির বক্তব্যে বাংলাদেশ অর্থনীতি সমিতির আহ্বায়ক অধ্যাপক ড. মাহবুব উল্লাহ এসব কথা বলেছেন। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন ডিবেট ফর ডেমোক্রেসির চেয়ারম্যান হাসান আহমেদ চৌধুরী কিরণ।
হাসান আহমেদ চৌধুরী কিরণ তার বক্তব্যে বলেন, গত দেড় দশকে আওয়ামী শাসনামলে বাংলাদেশ টাকা পাচারের স্বর্গরাজ্যে পরিণত হয়েছিল। দুর্নীতিবাজ রাজনীতিবিদ, আমলা, ব্যবসায়ীসহ সরকারের সুবিধাভোগীরা নেক্সাসের মাধ্যমে এই অর্থ পাচার করেছেন। দেশের ইতিহাসে সবচেয়ে বেশি অর্থ পাচারের সঙ্গে মুজিব পরিবারের বিরুদ্ধে অভিযোগ রয়েছে। কিছু বিচারপতি আজ্ঞাবহ হয়ে বিচার ব্যবস্থাকে হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করেছেন। অতীতে দেশের বিচার ব্যবস্থা অর্থ পাচারকারীদের সুরক্ষা দিয়েছে। কয়লা ভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রে ওভার ইনভয়েসিংয়ের মাধ্যমে ব্যাপক অর্থ পাচার করা হয়েছে।
এছাড়াও ফার্নেস অয়েল, ক্যাপিটাল মেশিনারি, সার, পুরাতন জাহাজ আমদানিতে ওভার ইনভয়েসিংয়ের মাধ্যমে ব্যাপক অর্থ পাচার হয়েছে। সাবেক দুর্নীতিবাজ ডেপুটি গভর্নর এসকে সুরের জন্য বাংলাদেশ ব্যাংককে ঢালাওভাবে অভিযুক্ত করা ঠিক হবে না। বাংলাদেশ ব্যাংকে এখনো অনেক সৎ ও নিষ্ঠাবান কর্মকর্তা রয়েছেন। বর্তমান গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর তার সততা ও নিষ্ঠার মাধ্যমে বাংলাদেশ ব্যাংকের সুনাম রক্ষায় কাজ করছেন। আশা করা হচ্ছে, সব অনিয়মের বেড়াজাল ভেঙ্গে বাংলাদেশ ব্যাংকসহ দেশের আর্থিক খাত ঘুরে দাঁড়াবে। অর্থ পাচার নিয়ন্ত্রণে আসবে এবং অপরাধীদের দৃশ্যমান বিচারের মাধ্যমে শাস্তি হবে।
ডিবেট ফর ডেমোক্রেসির আয়োজনে "রাজনীতিবিদদের জন্যই আওয়ামী শাসন আমলে ব্যাপক অর্থ পাচার সম্ভব হয়েছে" শীর্ষক ছায়া সংসদে ঢাকার বেগম বদরুন্নেসা সরকারি মহিলা কলেজের বিতার্কিকদের পরাজিত করে ময়মনসিংহের আনন্দ মোহন কলেজের বিতার্কিকরা বিজয়ী হয়। প্রতিযোগিতায় বিচারক ছিলেন অধ্যাপক আবু মুহাম্মদ রইস, প্রফেশনাল অ্যাকাউন্টেন্ট আব্দুস সাত্তার সরকার, ড. এস. এম. মোর্শেদ, সাংবাদিক সাইদুল ইসলাম ও সাংবাদিক মাঈনুল আলম। প্রতিযোগিতা শেষে অংশগ্রহণকারী দলকে ট্রফি, ক্রেস্ট ও সনদপত্র প্রদান করা হয়।