সুন্দরবন দিবস আজ
জাতীয়ভাবে দিবসটি পালনে ২৩ বছরেও মেলেনি সাড়া

যুগেরচিন্তা২৪ ডেস্ক
প্রকাশ: ১৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ১১:২৮ এএম

ছবি : সংগৃহীত
বিশ্বের একক বৃহত্তম ম্যানগ্রোভ বন সুন্দরবন। যার অপরূপ প্রাকৃতিক সৌন্দর্য ও জীববৈচিত্র্যে সমৃদ্ধ পরিবেশ প্রতিনিয়ত মানুষকে মুগ্ধ করে। ১৪ ফেব্রুয়ারি, ‘সুন্দরবন দিবস’, সেই বন সংরক্ষণের দাবি তুলে ধরার একটি গুরুত্বপূর্ণ দিন। ২০০২ সাল থেকে সুন্দরবন-সংলগ্ন উপকূলীয় জেলাগুলোতে এই দিবস পালিত হয়ে আসছে, যদিও জাতীয় পর্যায়ে এখনো তা স্বীকৃতি পায়নি।
বিগত ২৩ বছর ধরে বিভিন্ন সংগঠন ও পরিবেশবাদীরা সরকারের কাছে জাতীয়ভাবে সুন্দরবন দিবস পালনের দাবি জানিয়ে আসছেন। তাদের মতে, জাতীয়ভাবে এই দিবস পালন করা হলে সুন্দরবনের গুরুত্ব দেশ-বিদেশে ছড়িয়ে দেওয়া সম্ভব হবে, যা বন সংরক্ষণের ক্ষেত্রেও সহায়ক হবে।
সুন্দরবনের মোট আয়তন প্রায় ৬,০১৭ বর্গকিলোমিটার, যার মধ্যে ৪,১৪৩ বর্গকিলোমিটার স্থলভাগ এবং ১,৮৭৩ বর্গকিলোমিটার জলভাগ। ১৮৭৮ সালে সুন্দরবনকে সংরক্ষিত বন হিসেবে ঘোষণা করা হয় এবং বর্তমানে এর অর্ধেকের বেশি এলাকা সংরক্ষিত বনাঞ্চল হিসেবে চিহ্নিত।
সুন্দরবন শুধু রয়েল বেঙ্গল টাইগারের আবাসস্থলই নয়, এটি ৫০৫ প্রজাতির বন্যপ্রাণী, ৮৭ প্রজাতির সরীসৃপ, ৪৯ প্রজাতির স্তন্যপায়ী প্রাণী, ২২৫টি গাঙ্গেয় ডলফিন ও ৩৫৫ প্রজাতির পাখির বাসস্থান। এই বন হাজার হাজার স্থানীয় জনগোষ্ঠীর জীবিকার উৎস, পাশাপাশি দেশি-বিদেশি পর্যটকদের আকর্ষণের কেন্দ্রবিন্দু।
জলবায়ু পরিবর্তন ও মানবসৃষ্ট দূষণের ফলে সুন্দরবন বর্তমানে ভয়াবহ সংকটের মুখে। প্লাস্টিক ও পলিথিন দূষণ, বন উজাড়, অবৈধ শিকার ও শিল্পায়নের প্রভাব সুন্দরবনের জীববৈচিত্র্যের ওপর মারাত্মক নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে।
২০০১ সালের ১৪ ফেব্রুয়ারি খুলনায় সুন্দরবন সম্মেলনের মাধ্যমে এই দিবস পালনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এরপর থেকে রূপান্তর, খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় ও বাপা-সহ বিভিন্ন সংস্থা এ দিবস পালনে সচেষ্ট রয়েছে। খুলনায় বিভাগীয় পর্যায়ে বন অধিদপ্তর ও সুন্দরবন একাডেমির উদ্যোগে দিবসটি পালিত হলেও জাতীয় পর্যায়ে এখনো সরকারিভাবে কোনো স্বীকৃতি মেলেনি।
পরিবেশবিদদের মতে, জাতীয়ভাবে সুন্দরবন দিবস পালিত হলে এর সংরক্ষণ আরও জোরদার হবে। এ বছর যুব ফোরামের অন্যতম দাবি—‘প্লাস্টিক, পলিথিন ও কারেন্টজালমুক্ত সুন্দরবন চাই।’
পরিবেশ সচেতন মহল ও বন সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলো আশা করছে, সরকার দ্রুত জাতীয়ভাবে সুন্দরবন দিবস পালনের উদ্যোগ নেবে, যাতে সুন্দরবনের গুরুত্ব বিশ্বব্যাপী আরও বেশি করে ছড়িয়ে দেওয়া সম্ভব হয়।