বসুন্ধরা গ্রুপের অর্থ পাচারের অভিযোগ : যুক্তরাজ্য ও দুবাইয়ে সম্পদ জব্দের আদেশ

যুগেরচিন্তা২৪ ডেস্ক
প্রকাশ: ২০ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ১১:০২ এএম

বসুন্ধরা গ্রুপের চেয়ারম্যান আহমেদ আকবর সোবহান ও তার ছেলে ব্যবস্থাপনা পরিচালক সায়েম সোবহান আনভীর।
দেশের অন্যতম বৃহৎ আবাসন কোম্পানি বসুন্ধরা গ্রুপের চেয়ারম্যান আহমেদ আকবর সোবহান ও তার পরিবারের বিরুদ্ধে অর্থ পাচার ও অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে আদালত কঠোর পদক্ষেপ নিয়েছে। আদালতের নির্দেশে যুক্তরাজ্যে ছয়টি কোম্পানির বিনিয়োগ অবরুদ্ধ করা হয়েছে এবং দুবাইয়ের বুর্জ খলিফায় অবস্থিত একটি বিলাসবহুল ফ্ল্যাট জব্দের আদেশ দেওয়া হয়েছে।
ঢাকা মহানগরের জ্যেষ্ঠ বিশেষ জজ জাকির হোসেন গালিব মঙ্গলবার দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে এই আদেশ দেন। দুদকের উপপরিচালক নাজমুল হোসেনের আবেদনের ভিত্তিতে আদালত শুনানি নিয়ে এই সিদ্ধান্ত দেয় বলে জানিয়েছেন সংস্থাটির সহকারী পরিচালক আমিনুল ইসলাম।
যুক্তরাজ্যে অবরুদ্ধ বিনিয়োগ :
সায়েম সোবহান আনভীরের নামে ক্যালকাট্রুনিক হোল্ডিং ও জিএজিএজিইউজিইউ কোম্পানিতে মোট ১০,০০০ ইউরো বিনিয়োগ। ওয়ার্ল্ডেরা কর্পোরেশন লিমিটেডে ১,০০০ শেয়ারের বিনিয়োগ। এএসডব্লিউএ হোল্ডিংস লিমিটেডে ৫,০০০ শেয়ার। আনভীরের স্ত্রী সাবরিনা সোবহানের নামে ইউরোএশিয়া টেলিভিশন নেটওয়ার্ক লিমিটেডে ৫,০০০ শেয়ার। বসুন্ধরা গ্রুপের পরিচালক সাফওয়ান সোবহান তাসভীরের নামে গ্লোবাল মাল্টি ট্রেড লিমিটেডের বিনিয়োগ।
দুবাইয়ে সম্পদ জব্দ :
বুর্জ খলিফার ১১ নম্বর ফ্লোরে সায়েম সোবহান আনভীরের নামে থাকা বিলাসবহুল ফ্ল্যাট।
দুদকের তদন্ত অনুযায়ী, বসুন্ধরা গ্রুপের চেয়ারম্যান আহমেদ আকবর সোবহান, তার স্ত্রী আফরোজা বেগম, পুত্রবধূসহ পরিবারের অন্তত আট সদস্য বিপুল পরিমাণ অবৈধ সম্পদ গোপনে অর্জন করেছেন এবং তা বিদেশে পাচার করেছেন।
দুদক বলছে, বসুন্ধরা গ্রুপের মালিকানাধীন বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ব্যাংক থেকে বড় অঙ্কের ঋণ গ্রহণ করলেও তার একটি উল্লেখযোগ্য অংশ বিদেশে পাচার করা হয়েছে। এসব অর্থ স্লোভাকিয়া, যুক্তরাজ্য এবং দুবাইয়ে বিভিন্ন কোম্পানির নামে বিনিয়োগ করা হয়েছে, যা বাংলাদেশ ব্যাংকের অনুমতি ছাড়াই সম্পন্ন হয়েছে।
গত আগস্টে ক্ষমতার পরিবর্তনের পর দুর্নীতিবিরোধী তদন্ত শুরু হয়। অক্টোবরে বাংলাদেশ ফিন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (BFIU) বসুন্ধরা গ্রুপের চেয়ারম্যান ও তার পরিবারের আট সদস্যের ব্যাংক হিসাব অবরুদ্ধ করে। একই মাসে আদালত তাদের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা দেয়। সিআইডি দেড় লাখ কোটি টাকা মূল্যের জমি দখল ও অর্থ পাচারের অভিযোগে আহমেদ আকবর সোবহান ও তার ছেলে সায়েম সোবহান আনভীরসহ সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু করে।
দুদকের মতে, এ ধরনের আর্থিক অপরাধ দেশের অর্থনীতির জন্য হুমকি স্বরূপ। তদন্তের পরবর্তী ধাপে আরও সম্পদ জব্দের সম্ভাবনা রয়েছে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে।