Logo
Logo
×

জাতীয়

সংবিধান বাতিল নয়, সংস্কার হতে হবে মূল কাঠামোর প্রতি শ্রদ্ধা রেখে : ড. কামাল হোসেন

Icon

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ: ২৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ১২:০৩ এএম

সংবিধান বাতিল নয়, সংস্কার হতে হবে মূল কাঠামোর প্রতি শ্রদ্ধা রেখে : ড. কামাল হোসেন

ছবি : সংগৃহীত

সংবিধান প্রণেতা ও প্রবীণ আইনজীবী ড. কামাল হোসেন বলেছেন, সংবিধান সংস্কারের নামে পুরো সংবিধান বাতিলের ধারণা সম্পূর্ণ ভুল। এটি বাস্তবায়িত হলে সংবিধান ধ্বংসের পথ তৈরি হবে। সংস্কার অবশ্যই সম্ভব, তবে তা মূল সংবিধানের প্রতি শ্রদ্ধাশীল থেকে করতে হবে।

বৃহস্পতিবার (২৭ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যায় ‘৭২-এর সংবিধান ও প্রস্তাবিত সংস্কার’ শীর্ষক এক আলোচনা সভায় এসব কথা বলেন তিনি। বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক আইনজীবী সমিতি আয়োজিত এ সভা অনুষ্ঠিত হয় সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির শহীদ শফিউর রহমান মিলনায়তনে।

ড. কামাল হোসেন বলেন, বাংলাদেশের সংবিধান আমাদের জাতির দীর্ঘ সংগ্রামের ফসল। এটি শুধুমাত্র আইনের একটি দলিল নয়, বরং জাতির স্বপ্ন, আকাঙ্ক্ষা ও সংগ্রামের প্রতিচ্ছবি। সংবিধানের পর্যালোচনা ও সংস্কারের আলোচনা নতুন কিছু নয়, তবে প্রশ্ন থেকে যায়— এই পরিবর্তন কতটা জনআকাঙ্ক্ষার প্রতিফলন ঘটাবে। যদি সত্যিই জনগণের ইচ্ছার প্রতিফলন হয়, তবে সেটিই হবে সংবিধানের প্রকৃত পথ ও পরিবর্তনের সার্থকতা।

তিনি আরও বলেন, ২০২৪ সালের ঘটনাপ্রবাহ আমাদের নতুন করে অনেক কিছু ভাবতে বাধ্য করেছে। বিশেষ করে ৫ আগস্টের অভিজ্ঞতা প্রমাণ করেছে, জনগণের আকাঙ্ক্ষা কখনোই উপেক্ষা করা যায় না। ছাত্রসমাজের আন্দোলন আমাদের ইতিহাসের ধারাবাহিকতারই অংশ, যেখানে এক প্রজন্ম তার ন্যায্য দাবিতে রাস্তায় নেমেছে, যেমনটি ঘটেছিল ১৯৫২, ১৯৬৯ এবং ১৯৭১ সালে। এই আন্দোলন শুধুমাত্র একটি নির্দিষ্ট সময়ের ঘটনা নয়, বরং এটি জাতীয় চেতনার অবিচ্ছেদ্য অংশ।

ড. কামাল বলেন, ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধ আমাদের শোষণমুক্ত, ন্যায়ভিত্তিক ও গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রের স্বপ্ন দেখিয়েছিল। সেই স্বপ্ন বাস্তবায়নের জন্যই ১৯৭২ সালের সংবিধান প্রণয়ন করা হয়েছিল। সুতরাং, ’৭২-এর সংবিধান বাদ দেওয়ার প্রস্তাব কোনোভাবেই যুক্তিসংগত নয়।

তিনি আরও বলেন, সংবিধানে পরিবর্তন ও সংশোধন আনতে হলে তা অবশ্যই জনগণের আশা-আকাঙ্ক্ষার প্রতিফলন ঘটিয়ে করা উচিত। এখন যে সংস্কারের কথা বলা হচ্ছে, সেটি অবশ্যই গভীরভাবে বিবেচনা করা প্রয়োজন। তবে সংবিধানের মূল কাঠামোর প্রতি শ্রদ্ধাশীল থেকে এবং বিস্তারিত আলোচনা ও ঐকমত্যের ভিত্তিতে পরিবর্তন আনতে হবে।

ড. কামাল হোসেন বলেন, সংবিধান সংস্কারের প্রয়োজনীয়তা থাকলে তার যৌক্তিক ব্যাখ্যা জনগণের সামনে তুলে ধরতে হবে। সংস্কারের নামে সংবিধান ধ্বংসের চেষ্টা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়।

সভায় সভাপতিত্ব করেন সিনিয়র আইনজীবী সুব্রত চৌধুরী। অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন— বীর মুক্তিযোদ্ধা অধ্যাপক ড. আবু সাইয়িদ (সাবেক তথ্য প্রতিমন্ত্রী), বাংলা একাডেমির সভাপতি অধ্যাপক আবুল কাসেম ফজলুল হক, বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের সভাপতি ডা. ফওজিয়া মোসলেম, সিনিয়র সাংবাদিক সোহরাব হাসান।

অনুষ্ঠানের সূচনা বক্তব্য দেন বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক সিনিয়র আইনজীবী জাহিদুল বারি।

Abu Al Moursalin Babla

Editor & Publisher
Email: [email protected]

অনুসরণ করুন