ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তে নিরাপত্তা জোরদার

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশ: ০৪ জানুয়ারি ২০২৫, ১১:৫৩ পিএম

বাংলাদেশের বর্তমান পরিস্থিতিতে ভারত-বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক সীমান্ত এলাকায় নিরাপত্তা জোরদার করেছে নয়াদিল্লি। ভারতীয় সীমান্ত রক্ষী বাহিনী বিএসএফ বাংলাদেশের সঙ্গে সীমান্তে এই নিরাপত্তা জোরদার করেছে। শনিবার ব্রিটিশ ইংরেজি দৈনিক দ্য টেলিগ্রাফ এ তথ্য জানিয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের একজন উপদেষ্টার মন্তব্যের পর ভারতের উত্তর-পূর্বাংশকে বাংলাদেশের সঙ্গে সংযুক্ত করার হুমকির পরিপ্রেক্ষিতে এই নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। গত ডিসেম্বরের মাঝামাঝি এই মন্তব্যের জন্য ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় "কড়া প্রতিবাদ" জানিয়েছিল। ২০ ডিসেম্বর ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র রণধীর জয়সওয়াল জানান, ঢাকায় আনুষ্ঠানিক প্রতিবাদ জানানো হয়েছে।
দিল্লিতে এক সাপ্তাহিক সংবাদ সম্মেলনে রণধীর জয়সওয়াল জানান, ‘‘নয়াদিল্লি সংশ্লিষ্ট সকলকে প্রকাশ্য মন্তব্য করার সময় দায়িত্বশীল হওয়ার পরামর্শ দিতে চায়।’’
তিনি আরও বলেন, ‘‘আমরা এই বিষয়ে বাংলাদেশি কর্তৃপক্ষের কাছে তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছি এবং জানিয়েছি যে উল্লিখিত পোস্টটি ইতোমধ্যে মুছে ফেলা হয়েছে। তবে আমরা সবাইকে মনে করিয়ে দিতে চাই, জনসমক্ষে মন্তব্য করার সময় সংশ্লিষ্ট সব পক্ষকে আরও সতর্ক থাকা উচিত।’’
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, শুক্রবার (৩ জানুয়ারি) বিএসএফ গঙ্গা, ব্রহ্মপুত্র এবং সুন্দরবনসহ ভারতের সীমান্ত অতিক্রমকারী নদীগুলোতে নতুন ভাসমান সীমান্ত চৌকি তৈরি করেছে। বিএসএফের একটি সূত্র জানায়, ‘‘পানিপথ সবসময়ই ঝুঁকিপূর্ণ। আমরা সীমান্ত এলাকায় ২৪ ঘণ্টা টহল চালিয়ে যাচ্ছি। সেখানে অতিরিক্ত ভাসমান ফাঁড়ি অবশ্যই আমাদের সহায়তা করবে। এগুলো সময়ের প্রয়োজন।’’
সরকারি চাকরিতে কোটার বিরুদ্ধে আন্দোলনের মুখে গত ৫ আগস্ট বাংলাদেশ ছেড়ে ভারতে পালিয়ে যান শেখ হাসিনা। তিনি সামরিক বিমানে করে ঢাকায় বিক্ষুব্ধ জনতার সহিংসতার আশঙ্কায় ঢাকা ত্যাগ করেন।
পরে বাংলাদেশের নোবেল বিজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠিত হয়। এই সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের উপর কথিত নিপীড়নের অভিযোগ তুলে ভারত প্রতিবাদ করে আসছে। এতে দুই দেশের সম্পর্কে টানাপড়েন সৃষ্টি হয়েছে।
নয়াদিল্লি জানিয়েছে, হিন্দু ও অন্যান্য সংখ্যালঘুদের জীবন ও স্বাধীনতা রক্ষার দায়িত্ব ঢাকার অন্তর্বর্তী সরকারের।
ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী কীর্তি বর্ধন সিং জানিয়েছেন, গত ৮ ডিসেম্বর পর্যন্ত বাংলাদেশে হিন্দু ও অন্যান্য সংখ্যালঘুদের উপর ২,২০০টি হামলার ঘটনা ঘটেছে; যা আগের বছরে ছিল ৩০২। তবে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের প্রেস উইং এই পরিসংখ্যানকে অতিরঞ্জিত বলে অভিহিত করেছে এবং বলেছে যে, গত নভেম্বর পর্যন্ত মাত্র ১৩৮টি হামলার ঘটনা ঘটেছে।