অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় প্রবেশের জন্য ১ হাজার ৩০০ ত্রাণবাহী ট্রাক প্রস্তুত

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশ: ১৮ জানুয়ারি ২০২৫, ০৯:৩৯ পিএম

ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় প্রবেশের জন্য ১ হাজার ৩০০ ত্রাণবাহী ট্রাক প্রস্তুত রয়েছে বলে জানিয়েছেন জাতিসংঘের শিশুবিষয়ক সংস্থা ইউনিসেফের মুখপাত্র রোজালিয়া বোলেন। তিনি সংবাদমাধ্যম আলজাজিরাকে জানিয়েছেন, ইউনিসেফের পক্ষ থেকে ১ হাজার ৩০০ ট্রাক প্রস্তুত রয়েছে এবং এরপর আরও ৭০০ ট্রাক গাজায় প্রবেশ করতে সক্ষম হবে। অন্যান্য মানবিক সহায়তা সংস্থাও এই প্রস্তুতির সঙ্গে যুক্ত আছেন।
ইউনিসেফের কর্মকর্তা জানান, গাজার অনেক মানুষ উত্তরাঞ্চল থেকে আল-মাওয়াসির দিকে চলে আসছেন। যুদ্ধবিরতি শুরু হলে সেখানকার বাসিন্দারা পুনরায় নিজ বাড়িতে ফিরতে পারেন। যদিও এই প্রক্রিয়া জটিল হতে পারে, তবে তারা সমন্বয় করে ত্রাণ সহায়তা কার্যক্রম চালিয়ে যাবেন।
দখলদার ইসরায়েল এবং হামাসের মধ্যে যে চুক্তি হয়েছে, তার প্রেক্ষিতে গাজার উত্তরাঞ্চলের মানুষ ধীরে ধীরে তাদের জায়গায় ফিরতে পারবেন। তবে যুদ্ধবিরতি কার্যকর হলে সাধারণ জনগণ সেখানে যেতে পারবেন বলে ধারণা করা হচ্ছে। ইসরায়েলি সেনারা গাজায় অবস্থান করবে এবং সেখানে অবিস্ফোরিত বোমা ও অন্যান্য বিপজ্জনক বস্তু থাকতে পারে বলে সতর্ক করা হয়েছে। গাজার সিভিল ডিফেন্স সকলকে ধৈর্য ধরে উত্তরাঞ্চলে যাওয়ার আহ্বান জানিয়েছে।
এছাড়া, জানা গেছে যে, উত্তরাঞ্চলের ৯০ শতাংশ ঘরবাড়ি পুরোপুরি বা আংশিকভাবে ধ্বংস হয়ে গেছে এবং সেই ধ্বংসাবশেষ জীবনের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ হতে পারে।
আগামীকাল রোববার যুদ্ধবিরতি চুক্তির প্রথম পর্যায়ে হামাস তাদের কব্জায় থাকা ৩৩ জনকে মুক্তি দেবে। এর বিনিময়ে ইসরায়েলি সরকার তাদের কারাগারে বন্দি থাকা ১ হাজার ৯৭৭ জন ফিলিস্তিনিকে ছেড়ে দেবে।
প্রথম দিনের বিনিময়ে ৩ ইসরায়েলির বদলে ৯৫ জন ফিলিস্তিনিকে মুক্তি দেওয়া হবে, যাদের মধ্যে ৬৯ জন নারী, ১৬ জন পুরুষ এবং ১০ জন শিশু রয়েছে। ইসরায়েলি বিচার মন্ত্রণালয় ইতিমধ্যে এই ৯৫ জনের নাম প্রকাশ করেছে।
ইসরায়েলি সংবাদমাধ্যমগুলো নিশ্চিত করেছে যে চুক্তির শর্ত অনুসারে যুদ্ধবিরতির প্রথম পর্যায় ৪২ দিন স্থায়ী হতে পারে, তবে প্রয়োজনে এই মেয়াদ বাড়তে পারে। চুক্তি অনুযায়ী, প্রথম পর্যায়ে হামাস নারী, বয়স্ক এবং শারীরিকভাবে অসুস্থদের প্রাধান্য দিয়ে মুক্তি দেবে।
অন্যদিকে, ইসরায়েল ১ হাজার ৯৭৭ জন ফিলিস্তিনি কারাবন্দিকে মুক্তি দেবে, যাদের মধ্যে ২৯০ জন যাবজ্জীবন কারাবাসের সাজাপ্রাপ্ত এবং বাকিরা বিভিন্ন মেয়াদে কারাবাসের সাজাপ্রাপ্ত রয়েছেন। তবে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত কোনো ফিলিস্তিনিকে মুক্তি দেওয়া হবে না।
আগামী ৬ সপ্তাহে সাত দফায় ৩৩ ইসরায়েলি জিম্মি এবং ১ হাজার ৯৭৭ জন ফিলিস্তিনিকে মুক্তি দেওয়া হবে বলে চুক্তির শর্তে উল্লেখ করা হয়েছে।