আবারও অবৈধ ভারতীয় অভিবাসীদের হাত-পা বেঁধে ফেরত পাঠাল যুক্তরাষ্ট্র

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশ: ১৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০৬:৪৯ পিএম

ছবি : সংগৃহীত
নিজেদের সামরিক বিমানে করে আরও ১১৬ জন ভারতীয় অভিবাসীকে দেশে ফেরত পাঠিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। গতকাল শনিবার (১৫ ফেব্রুয়ারি) রাতে পাঞ্জাবের অমৃতসার বিমানবন্দরে মার্কিন সামরিক পরিবহন বিমান সি-১৭ অবতরণ করে, যেখানে ফেরত আসা ব্যক্তিদের মধ্যে বেশিরভাগই পাঞ্জাবের বাসিন্দা।
এর আগে, গত ৫ ফেব্রুয়ারি যুক্তরাষ্ট্র ১০৪ জন ভারতীয়কে ফেরত পাঠায়, যাদের হাত-পা শিকলে বাঁধা ছিল। এ ঘটনায় ভারতের রাজনৈতিক অঙ্গনে ব্যাপক সমালোচনা সৃষ্টি হয়। সেই সময় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে বৈঠক করে ভারতীয় অভিবাসীদের প্রতি মানবিক আচরণ করার আহ্বান জানান। তবে, সেই বৈঠকের পরও ফেরত পাঠানো ভারতীয়দের শিকলে বাঁধার ঘটনাই পুনরাবৃত্তি হয়েছে।
ফেরত পাঠানো ব্যক্তিদের মধ্যে দলজিত সিং নামে একজন যুবক জানান, যুক্তরাষ্ট্র থেকে ভারত ফেরার পুরো সময়জুড়ে তাদের হাত বাঁধা ছিল এবং পায়ে শিকল পরানো হয়েছিল। তিনি বলেন, "আমাদের হাত বাঁধা ছিল এবং পায়ে শিকল পড়ানো হয়েছিল।"
তিনি আরও জানান, একটি ট্রাভেল এজেন্টের মাধ্যমে তিনি যুক্তরাষ্ট্রে পাড়ি জমিয়েছিলেন, তবে বৈধপথে নয়। তাকে "ডানকি রুট" নামক অবৈধ অভিবাসন পদ্ধতির মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্রে পৌঁছানো হয়।
প্রথম ব্যাচের ১০৪ জন অভিবাসীকে শিকল পরিয়ে ফেরত পাঠানো হলেও, দ্বিতীয় দফায় ফেরত পাঠানো নারীদের ক্ষেত্রে কিছুটা ছাড় দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে একটি সূত্র।
ভারতে অবৈধ অভিবাসীদের শিকল পরিয়ে ফেরত পাঠানোর ঘটনায় রাজনৈতিক অঙ্গনে বিতর্ক সৃষ্টি হয়েছে। কংগ্রেস নেতা পি চিদাম্বরম এক্স (সাবেক টুইটার)-এ এক পোস্টে বলেন, "এটি ভারতীয় কূটনীতির জন্য একটি পরীক্ষা।" তিনি মোদি-ট্রাম্প বৈঠকের পর মার্কিন প্রশাসনের অবস্থান পরিবর্তন হয়েছে কি না, সেটি দেখার প্রয়োজনীয়তার কথা উল্লেখ করেন।
কংগ্রেসের এই নেতা আরও বলেন, "যুক্তরাষ্ট্রের বিমান যখন অমৃতসারে অবতরণ করবে, তখন সবার নজর থাকবে ফেরত আসা অভিবাসীদের দিকে। তাদের হাত-পা কী এবারও শিকলে বাঁধা থাকবে? এই প্রশ্নের উত্তরই বলে দেবে, ভারতীয় কূটনীতি সফল হয়েছে নাকি ব্যর্থ।"
দ্বিতীয় দফায় ভারতীয় অভিবাসীদের ফেরত পাঠানোর ঘটনায় বিষয়টি আরও আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে এসেছে এবং যুক্তরাষ্ট্রের অভিবাসন নীতির কঠোরতার বিষয়টি পুনরায় সামনে উঠে এসেছে।